প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর

প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা 

আজ আমরা জানবো প্রত্যক্ষ করে এবং পরোক্ষ কর সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। আপনারা যারা পর সম্পর্কে ধারণা পেতে আগ্রহী এবং এ বিষয়ে জানার জন্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। 

 

কর এর বিভিন্নভাবে শ্রেণীবিভাগ করা হয়।  এরমধ্যে করভার এর ভিত্তিতে করকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে একটি হলো প্রত্যক্ষ কর এবং অন্যটি হলো পরোক্ষ কর।

 

এখান থেকে আপনি জানতে পারবেন পরোক্ষ কর কি, প্রত্যক্ষ কর কি, প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ করের মধ্যে পার্থক্য, প্রত্যক্ষ করে সুবিধা অসুবিধা সহ আরো অনেক তথ্য।

 

প্রত্যক্ষ কর কি 

এখান থেকে আপনি জানতে পারবেন প্রত্যক্ষ কর কাকে বলে? যে করের করঘাত ও করপাত একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হয় তাকে প্রত্যক্ষ কর বলে। 

 

অর্থাৎ যে কর প্রথমে যার উপর ধার্য করা হয় চূড়ান্তভাবে তাকে পরিশোধ করতে হয় তাকে প্রত্যক্ষ কর বলে। প্রত্যক্ষ করের মধ্যে রয়েছে, আয়কর, সম্পদ কর ইত্যাদি। প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে কর সঞ্চালন করা যায় না।

 

প্রত্যক্ষ করের সুবিধা ও অসুবিধা

প্রত্যক্ষ কর যে কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রত্যক্ষ করে নানাবিধ সুবিধা রয়েছে। এর বিভিন্ন সুবিধা গুলো হল:

 

>> প্রত্যক্ষ কর পরিশোধে কর দাতাকে কোন বেগ পেতে হয় না। কারণ আয় কম হলে কর কম দিতে হয় এবং আয় বেশি হলে কর বেশি দিতে হয়।

>> প্রত্যক্ষ কর ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য দূর করে। কারণ অধিক আয়ের লোকদের কাছ থেকে অধিক করা আদায় করে কম আয়ের লোকদের জন্য সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির ব্যবস্থা করে বৈষম্য দূর করা যায়।

>> প্রত্যক্ষ কর একটি নিশ্চিত কর। সরকার জনসাধারণের উপর কর ধার্য করে নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারে। আবার জনগণও জানতে পারে তাকে কি পরিমান কর পরিশোধ করতে হবে। ফলে সরকার ও জনগণ উভয়ের সুবিধা হয়।

>> এই কর আদায়ের খরচ কম। কারণ যার উপর কর ধার্য করা হয় সে নিজে অথবা আয়কর আইনজীবীর মাধ্যমে সরাসরি সরকারকে কর জমা দেয়। তাই সরকারের কর আদায় খরচ অতি নগণ্য। সুতরাং সরকার তার ব্যয় কাম্যস্তরে রাখতে পারে।

>> এই কর নমনীয় হয়ে থাকে। প্রয়োজনে প্রত্যক্ষ করের হার হ্রাস বৃদ্ধি করে সরকারের রাজস্বের পরিমাণ কমানো বাড়ানো যায়।

>> প্রত্যক্ষ কর মুদ্রাস্ফীতি রোধের সাহায্য করে।

>> জয় নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে প্রত্যক্ষ কর।

>> সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করা যায় প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে।

আরও পড়তে ভিজিট করুনঃ 

15+ Freelancing marketplace list BD????

 

প্রত্যক্ষ করের অসুবিধা

প্রত্যক্ষ করের অসুবিধা

প্রত্যক্ষ করের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রয়েছে। এই সুবিধা গুলোর পাশাপাশি এই ঘরের কিছু অসুবিধা ও বিদ্যমান। নিচে প্রত্যক্ষ করার অসুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলো। 

 

>> এটি একটি অপ্রিয় কর ব্যবস্থা। কারণ সরকার সরাসরি জনগণের অর্জনের উপর ধার্য করে বিধায় তাদের পকেট থেকে করের অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

>> এই করের সব থেকে বড় অসুবিধা হলো জনগণ এই কর ফাঁকি দেয়। কারণ সরকার মনে করে জনগণ তাদের সঠিক আয়ের উপরেই কর দেবে। কিন্তু বাস্তবে হয় ভিন্ন। ভুল হিসাব দাখিল করে, অসৎ উপায় অবলম্বন করে, দুর্নীতি করে জনগণ সরকারকে কর ফাঁকি দেয়।

>> অনেক ক্ষেত্রে কর তা তার সামর্থ্য বিচার না করে সরকারি কর্মকর্তারা কর ধার্য করে। ফলে কর দাদারা ন্যায় বিচার পায় না।

>> প্রগতিশীল কর ব্যবস্থায় উচ্চ আয়ের জনগণকে উচ্চহারে কর দিতে হয়। ফলে আয়ের একটা বিরাট অংশ কর হিসেবে চলে যায় বিধায় সঞ্চয় প্রবণতা হ্রাস পায়।

>> অনেক ক্ষেত্রে কর দাদার আয় ও সম্পদের হিসাব গোপন রাখা সম্ভব হয় না। কারণ আয়কর বিবরণী জমা দেওয়ার সময় আয় ও সম্পদ বিবরণী বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হয়।

>> প্রত্যক্ষ কর সকল জনগণকে প্রদান করতে হয় না। ধনী ব্যক্তিদের নিকট থেকে এই করা আদায় করা হয় বিধায়ক এর ভিত্তি অত্যন্ত সংকীর্ণ।

>> প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ করা অনেক ক্ষেত্রেও সরকারের জন্য ব্যয়বহুল হয়। কারণ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে করা আদায় করা হয়।

 

পরোক্ষ কর কি 

 জেনে নিন পরোক্ষ কর কাকে বলে।

যে করের করঘাত ও করপাত ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বহন করে তাকে পরোক্ষ কর বলে। অর্থাৎ যার উপর কর ধার্য করা হয় তার করভার অন্যের উপর চাপাতে পারে। 

 

এরূপ করের ক্ষেত্রে করঘাত করদাতা বহন করলেও করপাত অন্য ব্যক্তি বহন করে। যেমনঃ বিক্রয় কর, আবগারি শুল্ক, ভ্যাট ইত্যাদি। 

 

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট প্রাথমিকভাবে আমদানি কারক বা বিক্রেতা প্রদান করলেও পরে পিতার কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারে। অর্থাৎ সংক্ষেপে বলা যায় যে করের বোঝা শেষ পর্যন্ত অন্যের উপর চাপানো যায়। এজন্য এ করকে পরোক্ষ কর বলা হয়।

 

প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ করের উদাহরণ 

প্রত্যক্ষ করের উদাহরণ হলোঃ আয়কর, ভূমি রাজস্ব, সম্পদ কর ইত্যাদি কর।

 

পরোক্ষ কর এর উদাহরণ হলোঃ বিক্রয় কর, আবগারি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর অর্থাৎ ভ্যাট ইত্যাদি।

 

প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর পার্থক্য 

প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর পার্থক্য 

প্রত্যক্ষ কর কি ও পরোক্ষ কর কি এটা জানার পাশাপাশি আপনি জেনে নিন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের মধ্যে পার্থক্য। নিচে দুটি কলের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য উল্লেখ করা হলোঃ

 

>> প্রত্যক্ষ কর নিশ্চিত ও নির্দিষ্ট। অন্যদিকে পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে করদাতা কর পরিষদের সময় ও পরিমান সম্পর্কে নিশ্চিত থাকে না।

>> প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে করঘাত ও করপাত একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হয়। অপরদিকে পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে করঘাত একজন এবং করপাত অন্যজন বহন করে।

>> নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে প্রত্যক্ষ কর পরিশোধ করতে হয় বলে অনেক সময় কষ্ট সাধ্য মনে হয়। সাধারণত দ্রব্য কয়ের সময় ক্রয় মূল্যের মাধ্যমে পরোক্ষ কর পরিষদ করা হয় বলে পরিশোধ সহজ হয়।

>> নগদ অর্থের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ কর পরিষদ করতে হয় বলে ফিরা দায়ক ও বিরক্তিকর মনে হয়। অন্যদিকে পর্দা তাকে সরাসরি কর পরিষদ করতে হয় না বলে পরোক্ষ কর বিরক্ত কর মনে হয় না।

>> প্রত্যক্ষ কর সাধারণত প্রগতিশীল বিধায় সমদর্শী। কিন্তু পরোক্ষ কর অর্ধ গতিশীল বিধায় ইহা অসমদর্শী।

>> সাধারণত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপর প্রত্যক্ষ কর ধার্য করা হয়। অপরপক্ষে ভোগ্য পণ্যের ওপর এই পরোক্ষ কর আরোপ করা হয়।

>> প্রত্যক্ষ কর সাধারণের বোধগম্য নয় বিধায় হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি করে। কিন্তু পরোক্ষ পর সাধারনের বোধগম্য এতে জটিলতা কম।

 

শেষ কথা 

প্রত্যক্ষ কর কি ও পরোক্ষ কর কি ও কর সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য দিয়ে লেখা পোস্টটি আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। এখান থেকে আপনারা আপনাদের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য পেয়ে গেছেন। 

পরবর্তীতে আর অন্য কোন বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকলে আমাদেরকে জানাতে পারেন। আপনাদের কোন জানার বিষয় অথবা মতামত থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখুন।

প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পোস্ট আপডেট পেতে আমাদের সাইটের সাথে থাকুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।। ধন্যবাদ।।