সরকারি অর্থব্যবস্থা

সরকারি অর্থব্যবস্থা ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য

সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং বেসরকারি অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হলে আগে আমাদের সরকারি এবং বেসরকারি অর্থব্যবস্থার সংজ্ঞা বুঝতে হবে 

 

সরকারি অর্থব্যবস্থা: অধ্যাপক টেইলার বলেন সরকারের অধীনে সুসংঘবদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে জনসাধারণের যাবতীয় আর্থিক সমস্যা নিয়ে যে শাস্ত্রে আলোচনা করা হয় তাকে সরকারি অর্থ ব্যবস্থা বলে। 

 

অপরদিকে বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা হল অর্থনীতির যে শাখা ব্যক্তিবিশেষের আয় ব্যয় নিয়ে আলোচনা করে তাকে বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা বলে।

 

ভূমিকা সরকারি এবং বেসরকারি অর্থব্যবস্থার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মিল থাকলেও এর অনেকগুলো পার্থক্য বিদ্যমান। এমতাবস্থায় নিম্নের সরকারি এবং বেসরকারি অর্থব্যবস্থার কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হলো:

 

সরকারি অর্থব্যবস্থা: 

সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় সরকারের যে শাখা সরকারের আয় ব্যয় বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাকে সরকারি অর্থ ব্যবস্থা বলে।

 

১.সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করা হয়। অর্থাৎ সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় ব্যয় দ্বারা আয়ের পরিমাণ নির্ধারণ হয়।

২. সরকারের ঋণ গ্রহণের উৎস অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক দোনটাই হতে পারে। অর্থাৎ সরকার চাইলে অভ্যন্তরীণ উৎস এবং বাহ্যিক উৎস থেকে ঋণ নিতে পারি। 

৩. সরকার কাগজ এবং ধাতব মুদ্রা ছাপিয়ে বা তৈরি করে তার ব্যয় নির্বাহ করে। 

৪. সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় বাজে টকে সময়সীমা হিসেবে ধরা হয়. অর্থাৎ সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় এক বছরের জন্য বাজেট তৈরি করা হয়। 

 

৫. সরকার সব সময় তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার ব্যয় নির্ধারণ করেন। 

 

৬. সরকারি বাজেটের ক্ষেত্রে কোন গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় না। 

৭. সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় সরকার তার ব্যয়ের ভারে কখনোই দেউলিয়া হয় না। 

 

৮. সরকারি অর্থ ব্যবস্থায় সরকারের আই ব্যয় কে বা সরকারের আয় ব্যয়ের উৎস বা উদ্দেশ্য হলো সর্বাধিক সামাজিক কল্যাণ করা।

 

বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা 

 

বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় ব্যক্তির আয় ব্যয় বিনিয়োগ নিয়ে অর্থনীতির যে শাখা আলোচনা করে তাকেই বেসরকারি অর্থ অবস্থা বলে।

 

১. ব্যক্তির আয় দ্বারা ব্যক্তি তার ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করেন। 

২. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় ব্যক্তির ঋণের প্রয়োজন হলে সে শুধু দেশের অভ্যন্তর থেকেই ঋণ গ্রহণ করতে পারে। 

৩. সরকার যেমন তার ব্যয় নির্বাহের জন্য নোট অথবা ধাতব মুদ্রা তৈরি করে বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় মোট অথবা ধাতব মুদ্রা তৈরি করে তার ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। 

৪. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় মাসিক অথবা সাপ্তাহিক বাজেট তৈরি করা হয়। বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় এক বছরের জন্য বাজেট তৈরি করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

৫. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় আইয়ের ওপর নির্ভর করে ব্যয় করা হয়। অর্থাৎ বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় ব্যক্তি সঞ্চয় করতে চাইলে তাকে তার আয়ের চাইতে কম ব্যয় করতে হয়। 

 

৬. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় গোপনীয়তার বিষয়টা করাকরি ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। 

৭. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় ব্যক্তি তার ব্যয়ের ভারে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে।

 

৮. বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থায় বেসরকারি আই ব্যয়ের উদ্দেশ্য হল সর্বাধিক মুনা পাওয়ার জন্য অর্থাৎ ব্যক্তির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিকেই এর উদ্দেশ্য ধরা হয়। 

 

শেষ কথা 

আমরা এখানে সরকারি এবং বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করলাম সরকারি এবং বেসরকারি অর্থ ব্যবস্থার মধ্যে ছোট ছোট পার্থক্য গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। আমাদের পরবর্তী পোস্টের জন্য অপেক্ষা করুন। আমাদের পোস্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন।