ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

ইসলামে  বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে ফিরে যেতে হবে কয়েকশো বছর আগে। অর্থাৎ রাসূল সাঃ এর যুগে। দেখতে হবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবারা বিড়ালকে কিভাবে দেখব বা কোন চোখে দেখতে। তাহলেই আমরা ইসলামী বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারব।

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

বিড়ালের লালন পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর ওজুর পাত্র থেকে বিড়ালকে পানি পান করাতেন।

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন ।বিড়ালের লালন পালন করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওজুর পাত্র থেকে বিড়ালকে পানি পান করাতেন। এর থেকে বোঝা যায় যে বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী।

 

✓✓ এক হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা ইবনে হাজার (রহ:) বলেন, ইমাম কুরতুবী (রহ:) বলেছেন, বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেঁধে রাখা জায়েজ বলে প্রমাণিত হয়, যদি তাকে খানাপিনা দেওয়ার ব্যাপারে যদি ত্রুটি না করা হয়। ( ফাতহুল বারী: ৬/৪১২) ।

✓✓ এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! পশু পাখিদের মধ্যেও কি আমাদের জন্য সওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, “প্রতিটি তাজা কলিজায় সওয়াব রয়েছে।” (বুখারি হাদিস: ৩৪৬৭, মুসলিম হাদিস: ২২৪৫) ।

✓✓ মুসলিম হাদিস থেকে বর্ণিত ” এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেওয়া হয়েছে। কারণ, বিড়ালটিকে আটকে রাখা হয় সেটি মারা গিয়েছিল। ফলে সে জাহান্নামে গেছে। বিড়ালটিকে সে আটকে রেখে খাবার পানি ও দেয়নি আবার ছেড়ে ও দেয়নি যাতে করে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে।” ( মুসলিম, হাদিসঃ ৫৭৪৫) ।

 

বিড়াল পোষার উপকারিতা

ইসলামী বিড়াল পোষার উপকারিতা অনেক। পবিত্র একটি প্রাণী হলো বিড়াল। আল্লাহর প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রিয় প্রাণী ছিল বিড়াল। তিনি বিড়াল পালন করতেন । ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ কিছু উপকারিতা আলোচনা করা হলো।

√√ বিড়াল পালন করা সুন্নত। বিড়াল আপনার বাড়িতে ফেরেশতাদের নিয়ে আসতে পারে এবং জিন দূর করতে পারে।

√√ এরা খুব পরিষ্কার এবং খাঁটি প্রাণী। এদের লালা বিশুদ্ধ।

√√ বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা হলো ইসলামী বিশ্বাসের লক্ষণ।

√√ বিড়াল আপনার বাড়ির ভিতরে থাকা খারাপ আত্মা এবং মন্দ উপাদান গুলোকে তাড়াতে পারে।

√√ যদি বিড়াল কাঁদে তাহলে বুঝতে হবে এটি আশেপাশের লোকদের কাছে খবর বা সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে।

√√ বিড়াল আপনার আশেপাশে ঘুরলে বুঝবেন যে সে আপনার প্রতি ভালোবাসা জানাচ্ছে। আপনার মধ্যে যদি কোন দূষিত কিছু থাকে তাহলে তাদের দূর করছে।

√√ একটি বিড়াল যদি আপনার আশে পাশে থাকে তাহলে কোনো স্বাভাবিক প্রাণী আপনার কাছে আসবে না।

ওপরের উপকারিতা গুলোর জন্য আপনি বিড়াল পুষতে পারেন। বিড়ালকে কখনো তাড়িয়ে দিবেন না আঘাত করবেন না। কারণ বিড়াল একটি উপকারী প্রাণী।

বিড়াল নিয়ে আরও পরতে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন 

বিড়াল নিয়ে ক্যাপশন বাংলা ও ইংরেজি

ইসলামে  বিড়াল পালন করা উচিত কেন?

বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী। ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা রয়েছে । নিম্নে উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলোঃ

√√ কোন মানুষের ঘরে যদি জ্বিনের অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে। তাহলে বিড়ালটি জ্বিনের সাথে যে নেগেটিভ এনার্জি থাকে সেগুলোকে শোষণ করতে পারে।

√√ বিড়ালের শরীরে আল্লাহ এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া দিয়েছেন। যার সাহায্যে শুধু জ্বিন নয় আমাদের আশেপাশে থাকা সকল নেগেটিভ এনার্জি বিড়াল শোষণ করতে পারে।

√√ বিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রমাণিত যে, মানুষ যখন রাতে ঘুমায় তখন তার বাড়ির পোষা বিড়াল সারা রাত ধরে সে মানুষের শরীরের নেগেটিভ এনার্জি শোষণ করতে থাকে।

√√ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিড়াল পছন্দ করতেন। তিনি নিজে বিড়াল লালন পালন করতেন। তার বিড়ালের নাম ছিল মুয়েজ্জা। 

তার একজন প্রিয় সাহাবী বিড়াল লালন পালন করতেন। এজন্য খুশি হয়ে তিনি তার নাম দিয়েছিলেন আবু হুরায়রা। যার অর্থ বিড়ালের পিতা।

✓✓ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শুধুমাত্র বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার কারণে এক বনি ইসরাইলের নারীকে কবরে আজব দেওয়া হয়। সে মহিলাটিকে আজাব দেয়া হয় কারণ মহিলাটি বিড়ালকে বন্দী করে রাখা অবস্থায়, তাকে কোনরকম পানাহার করতে দেয়নি। তাকে কোন খাবার ও দেয়নি। ফলে বিড়ালটি মারা যায়। যার কারনে মহিলাটির কবরে শাস্তি নেমে আসে। ( সহীহ বুখারী হাদিস:৩৪৮২) ।

বিড়াল পবিত্র প্রাণী হাদীস এবং ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা 

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা বিদ্যমান।

রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম ইরশাদ করেন, ” বিড়াল সর্বদা নাপাক বস্তু হতে দূরে থাকার চেষ্টা করে। বিড়াল হচ্ছে এমন এক প্রাণী যে কিনা মানুষের আশেপাশে ঘুরতে পছন্দ করে।” 

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বিড়াল এর প্রতি সবসময় সদয় আচরণ করতেন। আমাদেরও উচিত নবীর দেখানোর পথ অনুযায়ী দেয়ালের সাথে সুন্দর আচরণ করা।

আপনার পোষা বিড়াল যদি কোন সময় আক্রমনাত্বক হয়ে ওঠে এবং আপনার ও আপনার পরিবারের সাথে খারাপ আচরণ করতে শুরু করে। আপনার ক্ষতি করে। সেক্ষেত্রে তাকে মেরে না ফেলে দূরে কোথাও ফেলে আশায় ভালো।

বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে ও ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা 

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পেরেছেন যে, । আজ থেকে ৮,০০০ বছর পূর্বে জঙ্গল থেকে বিড়াল খাবারের খোঁজে জনবসতিপূর্ণ জায়গায় আসতে শুরু করেছিল। সেই সময় জমিতে ইঁদুরের উৎপাত খুবই ছিল। সেই ইঁদুরদের তাড়া করতে করতে বিড়াল জনবসতিতে এসে পৌঁছায়।

জমিতে যে সব ইঁদুর থাকত সেগুলো বিড়ালের পছন্দের খাবার ছিল। পাশাপাশি ঈদের গুলো মানুষের জন্য খুবই সমস্যার কারণ ছিল। বিড়াল সেই সময় ইঁদুরগুলোকে মেরে খেয়ে ফেলত। এর ফলে মানুষ তাদের সমস্যা থেকে রক্ষা পেয়েছিল। এতে করে মানুষ এবং বিড়ালের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। 

বর্তমানে মানুষের প্রসাব প্রাণীর তালিকায় প্রিয় প্রাণী হিসেবে বিড়াল এক নম্বরে রয়েছে।

৬ টি কারণে আপনার বিড়াল পালন করা উচিত

বিড়াল পালন করা জায়েজ। ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা রয়েছে। রাসুল সাল্লাহু সাল্লাম নিজে বিড়াল পালন করতেন। যারা পবিত্র বাইতুল্লায় গিয়ে হজ পালন করেছেন। তারাও সেখানে বিড়াল ঘোরাঘুরি করতে দেখেছেন। বিড়াল একটি পবিত্র প্রাণী হওয়ায় এটি মসজিদে ও যেতে পারে।

১. নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বিড়াল পছন্দ করতেন। তাহলে আপনার বাড়িতে যদি বিড়াল থাকে এটি খুব ভালো। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন যে রাসুল সাঃ এর পছন্দের একটি প্রাণী আপনার বাড়িতে আছে।

২. যেহেতু আল্লাহর নবী বিড়াল পালন পছন্দ করতেন। তাই এটা আল্লাহর পছন্দ। সুতরাং বিড়াল পালন আপনার জন্য পছন্দ করা ও শ্রেয়।

৩. বিড়খল পালন করা সুন্নত। কারণ স্বয়ং আমাদের প্রিয় নবী সাঃ বিড়াল লালন পালন করতেন।

৪. বিড়ালের লালা অশুদ্ধ না। বিড়ালের লালা বিশুদ্ধ। তারা নিজেদের পরিষ্কার করে এবং প্রাণীটি খুবই শান্ত প্রকৃতির। 

৫. বিড়াল আপনার ঘরে থাকলে সে আপনার জন্য ক্ষতিকর কীট পতঙ্গ গুলো খেয়ে ফেলে। এটি আপনার এবং আপনার বাড়ির সদস্যদের জন্য খুবই ভালো।

৬. বিড়ালকে খাবার খাওয়ালে এবং যত্ন নিলে আপনি সওয়াবের ভাগীদার হবেন। এছাড়া আল্লাহ এবং রাসূলের প্রিয় মানুষ হতে পারবেন।

ঘরে বিড়াল থাকলে কি নামাজ হবে?

ঘরে বিড়াল থাকলে নামাজ হবে। কারণ বিড়াল হল একটি পবিত্র প্রাণী। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম নিজে বাড়িতে পালন করতেন। তিনি তার ওজুর পাত্র থেকে বিড়াল কে পানি পান করাতেন। ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা রয়েছে।

বিড়াল এমন একটি প্রাণীর যে প্রাণী মসজিদের প্রবেশ করতে পারে। অতএব ঘরে বিড়াল থাকলে নামাজ হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

শেষ কথা

ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা নিয়ে লেখা আজকের পোস্টটি আপনাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের পোস্টটি পড়ার পর বিড়াল সম্পর্কে আপনার ধারণাটাই বদলে যাবে। বিড়াল এমন একটি প্রাণী যে প্রাণী বাড়িতে থাকলে আপনার উপকার হবে অনেক।

বিড়াল পবিত্র প্রাণী হওয়ায় এই প্রাণী বাড়িতে থাকলে আপনার নামাজ হবে। এই প্রাণীটি আপনার বাড়িতে ফেরেশতা পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারে। আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। তাই আপনি বিড়াল লালন পালন করতে পারেন ।এতে কোন বাধা নেই।

আজকের পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন। যাতে তারাও বিড়াল সম্পর্কে এ নতুন নতুন তথ্যগুলো জানতে পারে।

পথ সম্পর্কে কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।