বিড়াল নিয়ে আপনারা যারা এই পোস্টটি সার্চ দিয়ে বিড়াল সম্পর্কে পড়তে এসেছেন তারা নিশ্চয়ই বিড়াল প্রেমী মানুষ।
আপনি যেহেতু বিড়াল প্রেমি তাহলে আপনাকে অবশ্যই বিড়াল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে হবে।
বিড়ালের বিভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভাস, বিড়াল সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য এসব বিষয়গুলো জানার জন্য আপনি নিশ্চয় আগ্রহী।
এই জন্য আপনার আর খোঁজাখুঁজি করার দরকার নেই কারণ এই পোস্টটিতে আপনি পেয়ে যাবেন বিড়াল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
এই পোস্টটি আমরা সাজিয়েছি বিড়াল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে যার মাধ্যমে আপনি বিড়াল সম্পর্কে বেশ ধারণা পেয়ে যাবেন।
তাহলে চলুন আর দেরি না করে আপনার আদরের পোষা প্রাণী বিড়াল ???? সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় গুলো জেনে নিন।
বিড়ালের বৈশিষ্ট্য
প্রথমেই আমরা বিড়ালের বিভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করব। বৈশিষ্ট্য গুলো পড়লে বিড়াল সম্পর্কে আপনার মোটামুটি একটি সুন্দর ধারণা হয়ে যাবে।
বিড়ালের যেসব বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে এগুলো হলো বিড়ালের আকার, বিড়ালের শারীরিক গঠন, কঙ্কাল, মাথার খুলি , নখর এই বিষয়গুলো। এগুলো ছাড়াও বিড়ালের আরো কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনি এখান থেকে জানতে পারবেন।
১. বিড়ালের আকার
গার্হস্থ্য বিড়ালের মাথার খুলি ছোট আকারের এবং এতে খাটো হাড় রয়েছে। এদের মাথা থেকে দেহের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৬ সেন্টিমিটার (১৮ ইঞ্চি) এবং উচ্চতা প্রায় ২৩ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার (৯-১০ ইঞ্চি) হয়ে থাকে। বিড়ালের লেজ প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) লম্বা হয়ে থাকে।
পুরুষ বিড়ালের তুলনায় মহিলা বিড়াল আকারে ছোট হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক গার্হস্থ্য বিড়ালের ওজন হতে পারে চার এবং পাঁচ কেজি।
২. বিড়ালের শারীরিক গঠন
বিড়ালের শারীরিক গঠন অন্যান্য ফলিড প্রজাতির মতোই। এদের শরীর হলো শক্তিশালী নমনীয়, তীক্ষ্ণ দাঁত, প্রত্যাহারযোগ্য নখর এবং দ্রুত প্রতিফলন রয়েছে। রাতের বেলায় এদের দৃষ্টি শক্তি এবং ঘ্রান শক্তি বিকশিত হয়ে থাকে।
বিড়ালের যোগাযোগের মধ্যে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর রয়েছে এগুলো হলো মিয়াও মিয়াও, গর গর আওয়াজ করা, গর্জন, গ্রন্টিং, ট্রিলিং, হিশিং। এগুলো ছাড়াও নির্দিষ্ট শারীরিক ভাষা রয়েছে।
পশুটি সামাজিক প্রজাতির হলেও এরা নির্জন শিকারি। শিকারি হিসেবে এই প্রাণীটি ক্রেপাসকুলার অর্থাৎ ভোরে এবং সন্ধ্যায় বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিড়াল খুব তীক্ষ্ণ বা খুব উচ্চ কম্পাঙ্ক শুনতে পায় যেমন ইঁদুর এবং অন্যান্য ছোট প্রাণীদের সৃষ্ট শব্দ। এরা ফেরোমন নিঃসৃত করে উপলব্ধি করতে পারে।
৩. বিড়ালের কঙ্কাল
অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো বিড়ালের ৭টি সারভিকাল কশেরুকা থাকে, ১৩টি বক্ষঃ কশেরুকা, ৭টি কটিদেশীয় কশেরুকা, ৩টি স্যাক্রাল কশেরুকা এবং লেজে একটি পরিবর্তনশীল কডাল কশেরুকা থাকে।
বিড়ালের মেরুদন্ডের গতিশীলতা এবং নমনীয়তার জন্য দায়ী হলো অতিরিক্ত কটিদেশীয় এবং বক্ষঃ কশেরুকা। বিড়ালের মেরুদন্ডের সাথে ১৩ টি পাঁজর কাঁধ এবং পেলভিস সংযুক্ত থাকে।
মানুষের হাতের বিপরীতে থাকে বিড়ালের অগ্রভাগ কাধের সাথে মুক্ত ভাসমান কণ্ঠাস্থ হাড় দ্বারা সংযুক্ত থাকে। এই হাড়ের সাহায্যে বিড়াল যে কোন স্থানের মধ্য দিয়ে চলে যেতে পারে এজন্য তারা তাদের মাথাকে উপযুক্ত করতে পারে।
৪. বিড়ালের মাথার খুলি
বিড়ালের মাথার খুলি হয়ে থাকে খুব বড় চোখের সকেট এবং একটি শক্তিশালী বিশেষ চোয়াল থাকে যা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। চোয়ালের মধ্যে মানুষের মত সাজানো দাঁত থাকে যার দ্বারা সেই শিকার হত্যা এবং মাংস ছিড়ে ফেলতে পারে। শিকার কে পরাজিত করার জন্য বিড়াল তার দুটি লম্বা ক্যানাইন দাঁত ব্যবহার করে থাকে।
গৃহপালিত বিড়ালদের চোয়ালের আকারের সাপেক্ষে অল্প ব্যবধানে ক্যানাইন দাঁত থাকে যার দ্বারা তারা পছন্দের ছোট ছোট কশেরূকাধারী ইঁদুর শিকার করতে পারে।
৫. বিড়ালের নখর
বিড়ালদের রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী এবং প্রলম্বিত নখর। বিড়ালের স্বাভাবিক ও শিথিল অবস্থানে নখর গুলি পায়ের আঙ্গুলের প্যাডের চারপাশে চামড়া এবং পশম দিয়ে আবৃত থাকে। এই পশমগুলোকে মাটির সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করে এবং ধারালো রাখে যা বিড়ালকে শিকারের সময় নীরব চলাফেরার সুবিধা দেয়।
সামনের নখর গুলো পেছনের নখর গুলোর থেকে বেশি তীক্ষ্ণ হয়ে থাকে। একটি বিড়াল তার নিজের ইচ্ছায় একা একা থাবায় তাদের নখর প্রসারিত করে ফেলতে পারে। তার শিকারের জন্য অথবা আত্মরক্ষায় কিংবা আরোহনে, ভীষণ বা নরমপৃষ্ঠে অতিরিক্ত ট্রাকশনের জন্য তাদের নখর গুলো প্রসারিত করতে পারে।
বেশিরভাগ বিড়ালের সামনের পায়ে পাঁচটি করে এবং পিছনের পাঞ্জায় চারটি নখ থাকে। ডিউক্লটি অন্যান্য নখর গুলির নিকটবর্তী থাকে। এছাড়াও প্রক্সিমালি হল একটি প্রোট্রুশন যা বিড়ালের ষষ্ঠ আঙ্গুল বলে মনে করা হয়।
বিড়ালের বাসস্থান
বিড়াল প্রকৃতিগতভাবে পরিষ্কার একটি প্রাণী। এই প্রাণীটির প্রয়োজন হয় নিয়মিত এবং সহজ প্রবেশের পরিবেশ। এছাড়াও টয়লেটে জন্য উপযুক্ত জায়গা থাকবে এমন পরিবেশে বিড়ালের বাসস্থান রাখতে হবে। বিড়াল ভারী ও নোংরা জায়গাতে থাকতে পছন্দ করে না।
গৃহপালিত বিড়াল প্রাথমিকভাবে মানুষের বাসস্থান এলাকায় বসবাস করে থাকে এবং এলাকায় কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকে। বিড়ালের জন্য অন্দর টয়লেট হিসেবে লিটার ট্রে ব্যবহার করলে তার জন্য ভালো হয়।
এর বাসস্থান এমন পরিবেশে হয় যেখানে খুঁজে পেতে সহজ এবং অল্প সময়ের জন্য বাস করে। সে বাসস্থানে বিড়ালের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য এবং আশ্রয় থাকতে হবে।
আরও সুন্দর সুন্দর নাম পেতে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে
ইসলামিক বিড়ালের নাম |ছেলে ও মেয়ে বিড়ালের সুন্দর নাম
বিড়ালের খাদ্যাভ্যাস ও বিড়ালের খাবার তালিকা
আপনি এই পোস্টটি পড়ছেন তার মানে আপনি হলেন বিড়াল প্রেমী একজন মানুষ। আপনার শখ করে পোষা বিড়ালটি যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই জন্য আপনাকে সব সময় তৎপর থাকতে হবে। তাহলে তো আপনাকে অবশ্যই বিড়ালের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে জানতে হবে।
বিড়ালের বয়স অনুযায়ী কি কি খাবার খায় তা আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। কারণ বিভিন্ন বয়সের বিড়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের খাবার পছন্দ করে ও খেয়ে থাকে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বয়স অনুসারে বিড়াল কি ধরনের খাবার খায়।
√ ছোট বিড়ালের জন্য আদর্শ খাবার হল মায়ের দুধ। এই বয়সে বিড়াল শুধুমাত্র তরল খাবারই খেতে পারে।
√ আপনার পোষা বিড়ালের বাচ্চাটি যদি orphan হয়ে থাকে তাহলে তাকে Baby feeder এ করে গরুর তরল দুধ অথবা পাউডার দুধ খাওয়াতে পারেন।
বিড়ালের বাচ্চার বেশি পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হলে Kitten food খাওয়ানো যাবে।
√ বিড়াল মাছ, মাংস, ডিম, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, Cat dry food and cat wet food সব ধরনের খবর খেতে পারে। এ খাবারগুলোর সাথে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ খাবার পানি পান করতে দিতে হবে।
√ বিড়াল হলো মাংশাসী প্রাণী তাই ভাতের সাথে মাংস মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। বিড়ালের খাওয়ার জন্য যে মাংস সেগুলো কোনরকম মসলা না দিয়ে শুধুমাত্র পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। কাঁচা মাংসে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে তাই মাংস সেদ্ধ করে খাওয়াতে হবে।
বিড়ালের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
বিড়ালের খাবার তালিকা থেকে পুষ্টি চাহিদা পূরণের বিস্তারিত তথ্য
বিড়ালের বয়স বোঝার উপায়
আমরা অনেকেই বিড়াল পালন করে থাকি কিন্তু বুঝতে পারি না যে বিড়ালের বয়সটি কত। বিড়ালের বয়স জানা খুবই জরুরী কারণ বিভিন্ন বয়সী বিড়ালদের খাদ্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে এবং এদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিড়ালের বয়স বুঝতে না পারলে সেটা বিড়ালের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । আমাদের সঠিকভাবে বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করতে হবে।
✓✓ বিড়ালের ব্যবহার এবং শারীরিক কিছু লক্ষণের মাধ্যমে বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করা যেতে পারে।
✓✓ বিড়ালের ওজন অনুযায়ী বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করা যেতে পারে। কারণ বিভিন্ন বয়সী বিড়ালের ওজন বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
✓✓ বিড়ালের ঘুমের ধরন দেখেও বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করা যায়।
✓✓ বিড়ালের চোখের মনি দ্বারা এর বয়স নির্ধারণ করা যায়।
✓✓ বিড়ালের দাঁতের সংখ্যা কয়টি সেটা গুনে বিড়ালদের বয়স নির্ধারণ করা যায়। বিড়াল যখন বড় হতে থাকে তখন বয়সের সাথে সাথে তাদের দাঁতে সংখ্যা ও বাড়তে থাকে।
✓✓ বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করার সঠিক উপায় হল একজন অভিজ্ঞ VET এর সাহায্য নিয়ে বয়স নির্ধারণ করা।
বিড়ালের বয়স সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
৬ টি সহজ উপায়ে বিড়ালের বয়স বোঝার উপায়
বিদেশী বিড়ালের দাম
বিদেশি বিড়ালের দাম নিয়ে আপনাদেরকে জানাবো গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। আপনারা যারা বিড়াল পালন করতে চান তারা অবশ্যই বিদেশী বিড়াল নিতে চান। কারণ দেশি বিড়ালের চেয়ে বিদেশি তাড়াতাড়ি পোষ মানে এবং এরা দেখতে খুবই সুন্দর হয় । এছাড়া এইসব বিড়াল খুব আদরের হয়ে থাকে।
বিদেশি বিড়ালের মধ্যে রয়েছে পার্সিয়ান বিড়াল ও কাটাবন বিড়াল।
একটি পার্সিয়ান বিড়ালের দাম ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
কাটাবন বিড়ালের দাম হয়ে থাকে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা।
বিড়ালের জ্বর হলে করণীয়
যদি আপনার আদরের পোষা বিড়ালটির জ্বর হয়ে থাকে তাহলে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নিন। আপনার বিড়ালকে দ্রুত আরাম দেয়ার জন্য ফলো করুন নিচের তথ্যগুলো।
- বিড়ালের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুন। যদি তাপমাত্রা 103 ডিগ্রী বা এর বেশি হয় তাহলে বুঝবেন যে সে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
- বিড়ালের জ্বর হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করে তার প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ান।
- আপনার বিড়ালটি যেন হাইড্রেটেড থাকে তা নিশ্চিত করুন। কারণ ডি-হাইড্রেটেড হলে জ্বর না কমে বেড়ে যেতে পারে। এজন্য প্রচুর পরিমাণে তরল খবর এবং পানি খেতে দিন।
বিড়ালের জ্বির নিয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
বিড়ালের জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে
বিড়ালের চোখের সমস্যা
বিড়ালের চোখ খুবই স্পর্শকাতর একটি অঙ্গ । এজন্য বিড়ালের চোখ ভাইরাস দ্বারা খুব তাড়াতাড়ি সংক্রমিত হতে পারে। বিড়ালের চোখের সমস্যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে কিছু হলো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, এলার্জি, চোখে ময়লা আসে, চোখ দিয়ে পানি পড়া, ইনফেকশন ইত্যাদি।
বিড়ালের চোখের সমস্যা হলে যে লক্ষণ গুলো দেখা দেয় তার মধ্যে আছে চোখ ফুলে যাওয়া, চোখের বল মেঘলা হয়ে যাওয়া, পুতুলের আকার অসম হয়ে যাওয়া, চোখ খসখসে হওয়া এবং অশ্রুসজল চোখ।
বিড়াল চোখের সমস্যার চিকিৎসা নির্ভর করে মূল সমস্যার উপর। সমস্যা অনুযায়ী চোখে চিকিৎসা করলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়।
বিড়ালের চোখের সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে
বিড়ালের চোখের সমস্যা ও তার প্রতিকার, সাথে ঘরোয়া কার্যকরী সমাধান
বিড়ালের উকুন দূর করার উপায়
উকুন হলো এক ধরনের ছোট ছোট পোকা। সাধারণত কুকুর ও বিড়ালের গায়ে উকুন দেখা যায় যা চামড়ার অসুখের অন্যতম কারণ। এইরকম উকুন দূর করার জন্য প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিড়ালের গোসলের সময় মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। উকুন ধ্বংস করার জন্য উকুন নাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। বিড়ালের জন্য বাজারে আলাদা ধরনের শ্যাম্পু পাওয়া যায় সেই শ্যাম্পু
সংগ্রহ করতে হবে।
অনেক সময় শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও বিড়ালের শরীরে উকুন দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে গোসল করার পর বিড়ালের জন্য একটি বিশেষ ধরনের স্প্রে পাওয়া যায় এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে
বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় সম্পর্কে সহজেই জেনে নিন
বিড়ালের পায়খানা না হলে করণীয়
বিড়ালের পায়খানা না হয় একটি স্বাভাবিক সমস্যা। তবে এটি যদি খুব বেশি বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
✓✓ বিড়ালের সুখের পানির সুব্যবস্থা না থাকলে অর্থাৎ ডিহাইড্রেশন হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এজন্য বিড়ালকে সবসময় ইচ্ছামত পানি পান করার ব্যবস্থা করতে হবে।
✓✓ বিড়ালের খাবারের ডায়েট ফাইবার যোগ করতে হবে এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত ভেজা খাবার খেতে দিতে হবে।
✓✓ বিড়ালের মল ত্যাগ জনিত সমস্যাটি বেশি দিন দীর্ঘ হলে পশু চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিড়ালের পায়খানা না হলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কে
বিড়ালের পায়খানা না হলে করনীয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়
বিড়াল কামড়ালে বা আঁচড় দিলে জলাতঙ্ক যাতে না হয় সেজন্য প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রতিষেধকের প্রয়োজন।
বিড়াল আঁচড় দিলে বা কামড়ালে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই প্রথম টিকা নিতে হবে। প্রথম টিকা দেয়ার পর ৩,৭, ১৪ এবং ২৮ তম দিন মোট ৫ ডোজ টিকা নিতে হবে।
বিড়াল কামড়ালে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিনের সাথে সাথে ধনুষ্টংকার বা টিটেনাস এর টিকা ও দিতে হবে।
বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা
বিড়াল পালনের বিভিন্ন রকম উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। এর উপকারিতা গুলো কাজে লাগিয়ে এর অপকারিতা গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
বিড়ালের উপকারিতার গুলো হলোঃ বিড়াল একটি ভালো সঙ্গী হতে পারে, একটি রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য তেমন কষ্ট করতে হয় না, অবসর সময় কাটানোর সময় হতে পারে, বাচ্চাদের জন্য ভালো হতে পারে, মানসিক সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ভালো হতে পারে, যারা স্ট্রেস কমাতে চান তাদের জন্য ভালো হতে পারে, যারা ভ্রমণ করেন তাদের জন্য ভালো এবং সীমিত গতিশীলতাযুক্ত লোকদের জন্য ভালো।
বিড়ালের অপকারিতা গুলো হলোঃ কিছু লোকের বিড়াল থেকে এলার্জি হতে পারে, এর লিটার বক্সের গন্ধ একটি সমস্যা, Fleas and ticks, ব্যয়বহুল, পরিত্যাগের ঝুঁকি, দায়িত্ব, অপ্রত্যাশিত আচরণ ইত্যাদি।
বিড়াল নিয়ে কবিতা
বিড়াল নিয়ে অনেক কবি অনেক কবিতা লিখে গেছেন। তার মধ্যে একটি হল জীবনানন্দ দাসের কবিতা। নিচে জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা [১৯৫৪ ( পৃঃ ৭০-৭১)] দেওয়া হলোঃ
বিড়াল
সারাদিন একটা বিড়ালের সঙ্গে ঘুরে ফিরে কেবলি আমার দেখা হয়
গাছের ছায়ায়, রোদের ভিতরে, বাদামী পাতার ভিড়ে;
কোথাও কয়েক টুকরো মাছের কাটার সফলতার পর
তারপর সাদা মাটির কঙ্কালের ভিতর
নিজের সহৃদয়কে নিয়ে মৌমাছির মতে নিমগ্ন হয়ে আছে দেখি;
কিন্তু তবুও তারপর কৃষ্ণচূড়ার গায়ে নখ আঁচড়াচ্ছে,
সারাদিন সূর্যের পিছনে-পিছনে চলছে সে।
একবার তাকে দেখা যায়,
একবার হারিয়ে যায় কোথায়।
হেমন্তের সন্ধ্যায় জাফরান-রং-এর সূর্যের নরম শরীরে
সাদা থাবা বুলিয়ে-বুলিয়ে খেলা করতে দেখলাম তাকে;
তারপর অন্ধকারকে ছোট-ছোট বলের মধ্যে থাবা দিয়ে লোভে আনল সে,
সমস্ত পৃথিবীর ভেতর ছড়িয়ে দিল।
বিড়াল নিয়ে ক্যাপশন
বিড়াল প্রাণীটি খুবই আদরের হয়ে থাকে। আপনারা যারা খুব শখের বশে বিড়াল লালন পালন করে থাকেন তারা নিশ্চয়ই চাচ্ছেন আদরের বিড়াল নিয়ে ক্যাপশন দিতে। তাহলে আপনি একদম ঠিক জায়গায় এসে গেছেন।
আজকের এই পোস্টটিতে আমরা আপনার জন্য নিয়ে এসেছি বেশ কিছু বিড়াল নিয়ে ক্যাপশন। এখানে ক্যাপশন হিসেবে মনীষী গণের উক্তি উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করি ক্যাপশন গুলো পড়ে আপনার অনেক ভালো লাগবে।
✓ একটি বিড়াল সাদা না কালো তা কোন ব্যাপার না, যতক্ষণ সে ইঁদুর ধরে।। দেং জিয়াওপিং।।
✓ বিড়ালরা আরামের গুনগ্রাহী হয় ।। জেমস হেরিয়ট ।।
✓ জীবনের দুর্দশা থেকে আশ্রয়ের দুটি উপায়ে রয়েছে: সংগীত এবং বিড়াল ।। আলবার্ট শোয়েইজার।।
✓ যখন আমি স্যান্ডবক্সে খেলতাম, বিড়াল আমাকে ঢেকে রাখতো।। রডনি জেনজারফিল্ড ।।
✓ আপনি একটি ঘুমন্ত বিড়ালের দিকে তাকিয়ে থাকুন ।বিশ্বাস করুন ভালো লাগবে।। জেন পাওলি ।।
✓ আমি বিড়াল আবিষ্কার না করা পর্যন্ত আমি কুকুর পছন্দ করতাম।। নাফিসা জোসেফ ।।
✓ আপনি জানেন, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে, আমি গ্রহের সবচেয়ে ভাগ্যবান বিড়াল।। হিউ হেফনার ।।
✓ বিড়ালটা যতই লড়াই করুক না কেন, সেখানে সর্বদা প্রচুর বিড়ালছানা রয়েছে বলে মনে হয়।। আব্রাহাম লিংকন ।।
✓ আপনি যদি একটি বিড়ালের লেজ ধরে রাখেন তবে আপনি যা শিখবেন তা আপনি অন্য কোন উপায় শিখতে পারবেন না।। মার্ক টোয়েন ।।
শেষ কথা
বিড়াল খুব প্রেমময় একটি পোষা প্রাণী হয়ে থাকে এর মতো মৃন্ময় আর কোন প্রাণী হয় না। বিড়ালকে খুব সহজেই পোষ মানানো যায়। একে প্রশিক্ষিত করাও খুব সহজ। এছাড়া বিড়ালের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম হয়ে থাকে।
প্রাণীটি পোষার আগে আপনাকে অবশ্যই এর বৈশিষ্ট্য এর খাদ্যাভ্যাস এবং অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে জানতে হবে। আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনি এ বিষয়গুলো সম্পর্কে সুন্দরভাবে ধারণা পেয়েছেন।
তাহলে আপনার এই পোস্টটি অন্যান্যদের সাথে শেয়ার করুন যাতে আপনার মত তারা বিড়াল প্রেমি তারা ও এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারে। পোস্ট সম্পর্কে কোন রকমের মতামত দেয়ার থাকলে ইনবক্স করুন।
পোস্টটি পুরোটাই পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আশা করি পোস্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। বিড়াল সম্পর্কে আরো অন্যান্য তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে থাকুন এবং নতুন নতুন পোস্ট আপডেট পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটটি ভিজিট করুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।