বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় জানতে আজকের পোস্টটি পুরোটাই মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। বিড়ালের উকুন হওয়া একটি স্বাভাবিক সমস্যা। যেকোনো বিড়ালের এই সমস্যাটি হতে পারে। কি সমস্যা একটু হলে চিন্তা কোন কারণ নেই। বিড়ালের উকুন মানুষের মাঝে সংক্রমিত হওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না । ঘরোয়া কিছু উপায় ব্যবহার করেও বিড়ালের উপর খুব সহজে নিরাময় করা যায়।
ঘরোয়া উপায় কাজে না দিলে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী উকুন দূর করার উপায় বের করতে হবে। পশু চিকিৎসকরা উকুন দূর করার জন্য কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট দেওয়ার কথা কখনোই বলেন না । বরং এ ধরনের করা ট্রিটমেন্ট দেওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করেন।
তাহলে আর কোনরকম সময় নষ্ট করে পড়ে নিন বিড়ালের গায়ের উকুন দূর করার উপায় ।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে বিড়ালের উকুন দূর করার উপায়
আপনারা আদরের বিড়ালটি যে কোন সময় উকুনে আক্রান্ত হতে পারে । এই সময় আপনার উচিত সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করে তার এই সমস্যাটি সহজে দূর করা। আপনার বিড়ালটি উকুনে আক্রান্ত হলে নিম্নলিখিত ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে উকুন নিধন
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে উকুনকে সম্পূর্ণরূপে মেরে ফেলা না গেলেও এটি দিয়ে উকুনের জন্য অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করা যায়। এটি ব্যবহার করলে উকুন বিড়ালের শরীর থেকে ঝরে পড়ে যায়।
বিড়াল নিয়ে আরও পড়তে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় || ৬ টি সহজ উপায়ে
বিড়ালের চোখের সমস্যা ও তার প্রতিকার, সাথে ঘরোয়া কার্যকরী সমাধান
পদ্ধতিঃ ১:১ অনুপাতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং কুসুম গরম পানি নিতে হবে। এই উপাদান দুটি একসাথে মিশিয়ে বিড়ালের গায়ে স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে মিশ্রণটি যাতে বিড়ালের লোম পেরিয়ে চামড়াতে গিয়ে পৌঁছায়।
এরপর আপনার বিড়ালটিকে এক মিনিট রোদে বসিয়ে রাখুন। বিড়ালটি যাতে তার শরীর এই সময় কোনভাবে চাটতে না পারে সেই বিষয়টায় নজর দিন।
কিছুক্ষণ পর একটি চিকন চিরুনি দিয়ে বিড়ালের লোম আঁচড়ে দিন । কিছুক্ষণ আঁচড়াতে থাকলে উকুন গুলো মাটিতে পড়তে থাকবে। মাটিতে ঝরে পড়া সব উকুন গুলো একটি একটি করে মেরে ফেলুন।উকুন মেরে ফেলা শেষ হলে বিড়ালের পুরো শরীর
সুন্দরভাবে মুছে পরিষ্কার করে দিন।
√√ উপরের পদ্ধতিতে যদি সমস্ত উকুন ঝরে না পড়ে যায় তাহলে ১:১ অনুপাতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ও পানি সুন্দর ভাবে মিশিয়ে বিড়ালকে কিছু সময় ধরে ভিজিয়ে রেখে গোসল করিয়ে দিন। এক্ষেত্রে ঠান্ডা পানির চেয়ে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করাই ভালো।
√√ আপনার আদরের পোষা বিড়ালটির বয়স যদি তিন মাসের কম হয় তাহলে তাকে গোসল করাবেন না । যদি গোসল করানোর খুব বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে গোসলের শেষে এই হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে তার লোমগুলো শুকিয়ে নিবেন।
শীতকাল হলে কোনভাবেই বিড়ালকে গোসল করানো যাবে না। কারণ এই সময় বিড়াল সর্দি কাশিতে মারা যায়।
বিড়াল নিয়ে আরও পড়তে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
বিড়ালের জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে
বিড়াল একটি প্রেমময় প্রাণী বিড়াল এর বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভাস, বাসস্থান ও অন্যান্য তথ্য
বিড়ালের উকুন হওয়ার লক্ষণ
বিড়ালের উকুন হলো ডানাবিহীন পোকামাকড়। এগুলো কয়েক মিলিমিটার জায়গা পর্যন্ত পরিমাপ করতে পারেৎ। এদের ডানা ঝাপ দেওয়ার কোন ক্ষমতা থাকেনা। কুকুর ও বিড়ালের শরীরে এই ধরনের পোকামাকড় দেখা যায়। উকুনের প্রায় তিন হাজার রকমের প্রজাতি আছে। এর মধ্যে বিড়ালকে যে প্রজাতিটি প্রভাবিত করে সেটি হলো ফেলিকোলা সাবরোস্ট্র্যাটাস।
বিড়ালের শরীরে উকুন হলে যে সব লক্ষন গুলো দেখা যায় সেগুলো হলো:
১. তীব্র চুলকানি: বিড়ালের গায়ে উকুন হলে বিড়াল সারাক্ষণ তার শরীর চুলকাতে থাকবে ।
২. ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া: উকুনের জানি অতিরিক্ত চুলকানোর ফলে বিড়ালের শরীরে ক্ষত সৃষ্টি হয়।
৩. EI চুল মলিন এবং ম্যাটেড হতে পারে।
বিড়ালের উকুননাশক শ্যাম্পু দিয়ে পোকা দমন
বিড়ালের উকুন হলো এক ধরনের বাহ্যিক পরজীবী। এই পরজীবী গুলো বিড়ালকে খুব বিরক্ত করে থাকে । এই পরজীবী গুলোর প্রভাবে বিড়াল অস্থির হয়ে ওঠে।
যেসব বিড়াল গুলো বাইরে চলাচল করে সেসব বিড়ালের এধরনের বাহ্যিক পরজীবী হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে । বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় হিসেবে নিম্নে উল্লেখিত শ্যাম্পু এবং ঔষধ ব্যবহার করা যায়।
√√ বিড়ালের উকুন দূর করার জন্য পশু চিকিৎসক নির্দিষ্ট শ্যাম্পু দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে এন্টিপ্যারাসিটিক শ্যাম্পু । এই শ্যাম্পু টি দিয়ে উকুনে আক্রান্ত বিড়ালকে সুন্দরভাবে গোসল করিয়ে দিতে হবে।
গোসল করানোর জন্য বিড়ালটি অবশ্যই প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। তিন মাসের কম বয়সী বিড়াল চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গোসল করানো যাবে না। কারণ এটি বিড়ালের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে
√√ উকুন হল বাহ্যিক পরজীবী এক ধরনের পোকা। এগুলো দূর করার জন্য শ্যাম্পুর পাশপাশি এন্টিপারাসিটিক প্রাইপেটস ব্যবহার করা যায়। এটি পশু চিকিৎসকের নিকট এবং পোষা প্রাণীর দোকানগুলোতে পাওয়া যায়। এটি একটি তরল ঔষধ ।
এই ঔষধ দিয়ে বিড়ালের শরীর খুব ভালো ভাবে মুছিয়ে দিতে হবে। এই ঔষধটি মাসে একবার ব্যবহার করতে হবে। আরও অধিক তথ্যের জন্য পশু চিকিৎসক এর সাথে পরামর্শ করতে পারেন ।
বিড়াল নিয়ে আরও পড়তে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
বিড়াল সম্পর্কে ১০টি বাক্য || বিড়াল নিয়ে উক্তি
ইসলামিক বিড়ালের নাম || ছেলে ও মেয়ে বিড়ালের সুন্দর নাম
বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় হিসেবে যেসব কাজ করা যাবে না
আদরের পোষা বিড়ালের শরীরে উকুন হলে তা দূর করার জন্য অনেক সময় কিছু কিছু মানুষ ভুল পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন। এতে করে তার আদরের বিড়ালটির উকুন হয়তো দূর হবে কিন্তু বিড়ালটি অসুস্থ হয়ে যেতে পারে অথবা মারা যেতে পারে।
তাই আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় হিসেবে আপনার কোন কাজগুলো করা উচিত নয়।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি কাজ করলে বিড়ালের উকুন দূর না হয়ে তার সমস্যা হতে পারে ।
√√ আপনার বিড়ালটির বয়স যদি তিন মাসের নিচে হয় তাহলে তার উকুন দূর করার জন্য কোন ভাবেই কোন রকম কেমিক্যাল, স্প্রে, পাউডার, কালার, ন্যাপথলিন, শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না।
√√ কুকুরের জন্য যে উকুননাশক স্প্রে, শ্যাম্পু, পাউডার পাওয়া যায় সেগুলো কোনভাবেই বিড়ালের শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না ।
√√ বর্তমানে অনেকেই বিড়ালের গায়ের পোকা দূর করার জন্য ইংলিশ উকুননাশক শ্যাম্পু এবং ন্যাপথলিন ব্যবহার করে থাকেন । এগুলো ব্যবহারে পশু চিকিৎসকরা নিরুৎসাহিত করে থাকেন। এগুলো ব্যবহার করলে কোন দূর হবে কিন্তু বিড়ালের সমস্যা হতে পারে।
বিড়ালের একটি প্রধান অভ্যাস হলো সে নিজের গা চেটে চেটে পরিষ্কার করে । এক্ষেত্রে আপনি যদি তার শরীরে লাগিয়ে দেন তাহলে এই বিষাক্ত জিনিসগুলো তার পেটে চলে যাবে।
যদি আপনি এগুলো ব্যবহার করেন তবে আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত থাকতে হবে যে, আপনি কোন ভাবে আপনার বিড়ালকে তার শরীর চাটতে দিবেন না যতক্ষণ না তাকে গোসল করিয়ে দেন।
√√ বিড়ালের উকুন দূর করার জন্য আপনি যখন তার শরীরে স্প্রে করবেন, তখন অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে এগুলো যেন তার চোখে, নাকে বা কানে না যায়।
√√ বিড়ালের লেজের গোড়ায় সবচেয়ে বেশি পোকা থাকে তাই স্প্রে করার সময় সেই জায়গাটা বেশি পরিষ্কার হচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
√√ বাসার সব বিড়ালকে একসাথে উকুন দূর করার ট্রিটমেন্ট দিতে হবে।
√√ ট্রিটমেন্ট দেওয়া শেষে অবশ্যই বিড়ালের ধুয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে । কারণ বিছানায় উকুনের ডিম থাকতে পারে যা থেকে আবার সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
বিড়াল নিয়ে আরও পড়তে নিচের লিঙ্কে ভিজিট করুন
ইসলামিক বিড়ালের নাম || ছেলে ও মেয়ে বিড়ালের সুন্দর নাম ||
বিড়ালের খাবার তালিকা থেকে পুষ্টি চাহিদা পূরণের বিস্তারিত তথ্য
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টটিতে বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় নেই আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আপনি জানতে পারবেন বিড়ালের উকুন দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বিড়ালের উকুননাশক শ্যাম্পু ও ঔষধ দিয়ে বিড়ালের গায়ের পোকা দমন সম্পর্কে।
আপনার আদরের পোষা বিড়ালটি যদি কোন ভাবে উকুনের দ্বারা সংক্রমিত হয় তাহলে আপনি উপরের পদ্ধতি গুলোর যেকোনো একটি অবলম্বন করতে পারেন। এসব পদ্ধতি দিয়ে খুব সহজে উকুন দূর করা সম্ভব।
আশা করি আজকের আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। এটাই পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন । পোস্ট সম্পর্কে কোন কিছু বলার থাকলে নিচে ইনবক্স করুন।
আমাদের পোস্টটি পোস্টটি পুরোটাই পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই ধরনের নতুন নতুন আরো অনেক পোস্ট আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।