বিড়ালের কাশি হলে করণীয়

বিড়ালের কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে জানুন

বিড়ালের কাশি হলে করণীয় – আপনার বিড়ালের যদি কাশি হয়ে থাকে, তাহলে কাশি তীব্রতা এবং ফ্রিকোয়েন্সি নোট করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি কাশির সাথে সাথে আপনার বিড়ালের ব্যথা হয় বা তার শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, তাহলে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

আর কাশির তীব্রতা যদি বেশি না হয় এবং কাশি কম থাকে তাহলে ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে আপনি আপনার বিড়ালকে সুস্থ করে তুলতে পারবেন।

তাহলে চলুন আজকের লেখা থেকে জেনে নেই বিড়ালের কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে।

বিড়ালের কাশির কারণ 

আপনারা যারা বিড়াল প্রেমী এবং বিড়াল লালন পালন করে থাকেন তারা লক্ষ করবেন আপনাদের বিড়াল অনেক সময় কাশতে থাকে । কাশি অনেক সময় থেমে থেমে হয় আবার কখনো দীর্ঘ সময় ধরে হতে পারে। বিড়ালের কাশি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এমনি কিছু দেওয়া হলোঃ

১. এলার্জির কারণে বিড়ালের কাশি হতে পারে।

২. হৃদরোগের জন্য বিড়ালের কাশি হতে পারে।

৩. ট্রমা অর্থাৎ শেষ যন্ত্রের ট্র্যাক্টে শারীরিক, রাসায়নিক বা তাপীয় আঘাতের কারণে বিড়ালের কাশি হতে পারে।

৪. শ্বসন অঙ্গের বিভিন্ন রোগ যেমন টিউমার, ইনফেকশন (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা প্যারাসাইটিক) এগুলোর জন্য কাশি হতে পারে।

৫. হৃদ যন্ত্রের কোন রোগের জন্যেও বিড়ালের কাশি করতে পারে।

৬. বিড়ালের হার্টওয়ার্মের লক্ষণ গুলো সূক্ষ্ম হতে পারে এবং কাশি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

৭. গলায় আর্ট শার্ট বেল্ট পড়ানো থাকলে বিড়ালের কাশি হতে পারে।

৮. এক্সপিরেশন নিউমোনিয়া ( শ্বসন অঙ্গে এ পাকস্থলীর এর কোন কিছু চলে আসা অথবা খাদ্য গ্রহণের সময় কিছু চলে আসা) কাশির একটি কারণ।

৯. শ্বসন অঙ্গে বাইরের কিছু প্রবেশ করার কারণেও কাশি হতে পারে। যেমন হেয়ার বল।

১০. ক্যান্সারের কারণে বিড়ালের কাশি হতে পারে।

১১. প্লুরাল ইফিউশন অর্থাৎ বিড়ালের ফুসফুসের চারপাশে তরলের একটি অস্বাভাবিক জমাট বাধা। এইটার কারণেও কাশি হতে পারে

১২. হাঁপানির কারণে বিড়ালের কাশি হতে পারে।

বিড়াল  সম্পর্কে আরও পড়তে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কগুলোতে  

বিড়ালের ঠান্ডার ঔষধ || বিড়ালের ঠান্ডা লাগলে করণীয়

বিড়াল নিয়ে ক্যাপশন বাংলা ও ইংরেজি

বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন 

বিড়াল নিয়ে কবিতা

বিড়ালের কাশি হওয়ার লক্ষণ

কোন রোগের কারণে যদি বিড়ালের কাশি হয় তাহলে নিম্নের লক্ষণ গুলো দেখা দিতে পারে:

১. গর গর শব্দের সাথে হঠাৎ হঠাৎ কাশি এবং এর সাথে শ্বাস নিতে কষ্ট হলে এটা হল অ্যাজমার লক্ষণ।

২. কাশির সাথে তন্দ্রা ভাব থাকে চোখ দিয়ে পানি আসে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।

৩. কফ শুকিয়ে যায়।

৪. ব্রঙ্কিউল টিউবে জ্বালাপোড়া করে।

৫. চলাফেরা করার পরে যদি শ্বাসনালীর সংকোচন তীব্র হয় সেটা ব্রংকাইটিসের লক্ষণ।

৬. বিক্ষিপ্ত কাশির সাথে অবসন্নতা, ক্ষুধামন্দা, ওজন কমে যাওয়া, কৃমি ও ফাঙ্গাস দ্বারা আক্রান্ত রোগের লক্ষণ। 

৭ . যদি ঘাড় বাড়িয়ে গভীর এবং হঠাৎ কাশির আক্রমণের সাথে কফ বের হয় তাহলে সেটা দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিসের লক্ষণ।

৮. কার্ডিওমাইওপথির মতো হৃদযন্ত্রের কোন রোগের কারনেও কাশি হতে পারে।

বিড়ালের কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা

আপনার বিড়ালের কাশি যদি খুব বেশি না হয় এবং সুস্থ মনে হয়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার বিড়ালকে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে দিতে পারবেন। তাহলে জেনে নিন বিড়ালের কাশি হলে করণীয় ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে।

✓✓ বিড়ালকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে দিতে হবে। কারণ পানি কাশির সাথে থাকে সেটা পাতলা করতে সাহায্য করে।

✓✓ আপনার বিড়ালকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে দিন। এছাড়াও নিশ্চিত করুন যে আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিচ্ছে।

✓✓ কাশি হলে বিড়ালকে কিছুটা মধু খাওয়াতে হবে। মধুতে প্রাকৃতিক এন্টি ব্যাকটেরিয়াল থাকে যা গলা প্রশমিত করে এবং কাশি কমাতে সাহায্য করে।

✓✓ কাশিতে আক্রান্ত বিড়ালটিকে উষ্ণ আদ্র পরিবেশে বিশ্রামের জায়গা করে দিতে হবে যাতে সে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে পারে।

✓✓ একটি গরম ঝরনা চালিয়ে এবং বাথরুমের দরজা বন্ধ করে বাড়িতে একটি হিউমিডিফায়ার তৈরি করুন। ঝরনা থেকে যে বাষ্প তৈরি হবে সেই বাষ্প আপনার বিড়ালের কাশি কম করতে সাহায্য করবে। এতে করে বিড়ালের কাশি সহজ হবে।

বিড়াল  সম্পর্কে আরও পড়তে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কগুলোতে  

ইসলামিক বিড়ালের নাম || ছেলে ও মেয়ে বিড়ালের সুন্দর নাম

বিড়াল একটি প্রেমময় প্রাণী বিড়াল এর বৈশিষ্ট্য, খাদ্যাভাস, বাসস্থান ও অন্যান্য তথ্য

বিড়ালের চোখের সমস্যা ও তার প্রতিকার, সাথে ঘরোয়া কার্যকরী সমাধান

বিড়ালের কাশি হলে করণীয়

আপনার বিড়ালের কাশি যদি ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। কাশি খুব বেশি হয়ে গেলে অসুস্থ বিড়ালকে নিবির যত্ন ও চিকিৎসার জন্য পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

✓✓ বিড়ালের যদি শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট থাকে তাহলে তাকে অক্সিজেন দিতে হবে।

✓✓ সাধারণ ইনফেকশন গুলোর জন্য প্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।

✓✓ চিকিৎসক প্রয়োজনে ডায়াগনোসিস করবে । পরবর্তীতে কাশি বন্ধ করার মেডিসিন দিবে যে সবসময় অঙ্গের ইনফেকশনের জন্য কাজ করবে না।

✓✓ বিড়ালের চিকিৎসা করতে হবে যে কাশি ভালো করার জন্য এটি প্রধান কাজ না। প্রধান কাজ হল কি কারণে কাশি হচ্ছে তা খুঁজে বের করে সেই কারণের ট্রিটমেন্ট করা।

✓✓ বিড়ালের যখন কাশি হবে তখন কয়েল, এয়ারফ্রেশনার, সিগারেটের ধোঁয়া, ধুলাবালি এসব কিছু থেকে বিড়ালকে দূরে রাখতে হবে।

✓✓ অসুস্থ বিড়ালকে অবশ্যই সুস্থ-বিধান থেকে আলাদা রাখতে হবে। এবং দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

বিড়ালের কাশি হলে করণীয়: হাল্কা কাশি

আপনার বিড়াল যদি হালকা কাশি দেয় অর্থাৎ মাঝে মাঝে কাশে। তাহলে তার সুস্থতার জন্য নিম্নের করণীয় গুলো পালন করুন।

✓✓ বিড়ালের হাল্কা কাশি হলে বিড়ালকে ঠান্ডা কোন খাবার দেওয়া যাবে না। যখনই খাবার দিবেন তখনই বিড়ালকে গরম খাবার দিতে হবে।

✓✓ বিড়ালকে ঠান্ডা পানি খেতে দেওয়া যাবে না। হাল্কা কুসুম গরম পানি ড্রপারের সাহায্যে খাওয়াতে হবে। গরম পানি কখনোই সরাসরি বিড়ালকে খেতে দেওয়া যাবে না।

✓✓ বিড়ালের হাল্কা কাশি হলে গলায়, বুকে এবং পিঠের উপর সেক দিতে হবে। সুতির কাপড় অথবা গেঞ্জির কাপড় গরম কিছুর উপর রেখে হাল্কা গরম করে দিতে হবে। দিনে দুই থেকে তিনবার সেক দিলে আপনার বিড়াল সুস্থ হয়ে উঠবে।

বিড়াল  সম্পর্কে আরও পড়তে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কগুলোতে  

বিড়ালের জ্বর হলে করণীয় সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে

বিড়াল সম্পর্কে ১০টি বাক্য || বিড়াল নিয়ে উক্তি 

বিড়ালের খাবার তালিকা থেকে পুষ্টি চাহিদা পূরণের বিস্তারিত তথ্য

 

বিড়ালের কাশির ওষুধ

বিড়ালের কাশি হলে করণীয় পালন করতে ঘরোয়া চিকিৎসা কাজ না করলে অবশ্যই ওষুধ দরকার। বিড়ালের কাশির ঔষধ হিসেবে কোন ওষুধ খাওয়াবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো।

Moxilin Vet DS (100g):

আপনার বিড়ালের যদি কাশি হয় তাহলে Moxilin Vet DS (100g) এই ওষুধটি খাওয়াতে পারেন। 

আপনার বিড়ালের ওজন যদি ২ কেজি হয় তাহলে ১.৫ গ্রাম ওষুধ ৫ মিলি পানিতে মিশিয়ে সকালে এবং রাতে খাওয়াতে হবে। আপনার বিড়ালের ওজন যদি ২ কেজি এর বেশি হয় তাহলে ১গ্রাম ওষুধ অল্প পানির সাথে মিশিয়ে আপনার বিড়ালকে খাওয়াতে হবে

Moxilin Vet DS (100g)

বিড়ালের এই ওষুধটি শুধু কাশির জন্য নয় সর্দি হলেও খাওয়াতে পারবেন। যে কোন ওষুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আপনার কে আপনার আদরের বোনটিকে সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া এবং অন্যান্য বিষয় গুলোর যত্ন নিন। এতে করে আপনার কম অসুস্থ হবে।

সবচেয়ে ভালো হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ানো।

বিড়াল  সম্পর্কে আরও পড়তে ভিজিট করুন নিচের লিঙ্কগুলোতে  

বিড়ালের পায়খানা না হলে করনীয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন

বিড়ালের উকুন দূর করার উপায় সম্পর্কে সহজেই জেনে নিন

শীতকালে বিড়ালের যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা

বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় || ৬ টি সহজ উপায়ে

শেষ কথা

আশা করি এই পোস্টটি পড়ার পর আপনি বুঝে গেছেন আপনার বিড়ালের কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে । বিড়ালের কাশি হলে প্রথমে কাশির কারণ গুলো খুঁজে বের করতে হবে। এরপর লক্ষণ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

যদি কাশি হালকা হয় তাহলে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমেই  বিড়ালকে সুস্থ করা যাবে। আর যদি কাশির তীব্রতা খুব বেড়ে যায় তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ভেটের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

বিড়ালের কাশি হলে করণীয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে আপনি খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আশা করি আজকের পোষ্টটি আপনার খুব উপকারে আসবে। আপনি এই পোস্টটি চাইলে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন যাতে অন্যরা উপকৃত হতে পারে।

আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।